০২:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেরপুরের ঝিনাইগাতী দিঘীরপাড়  ফাযিল মাদরাসায় সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ!

Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৪৩ Time View

 মিজানুর রহমান,শেরপুর জেলা  প্রতিনিধি:শেরপুর জেলার  ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রেরিত সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। জানা গেছে যে , প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক (শিক্ষক প্রতিনিধি) নওশেদ আলী এবং অফিস সহকারি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে। ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া, রাহিদুল ইসলাম, মোবাস্সার, আবু বকর সিদ্দিক, মুন্নি, রিয়াজুল ইসলামসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের মাঝে বিনামূল্যের সরকারি বই সম্পূর্ণভাবে বিতরণ করা হয়নি। বাইরে কেজি দরে বই বিক্রি করেছে। এখনো আমাদের ২-৩টি বই হাতে আসেনি। উপরন্তু বই প্রদানের সময় আমাদের কাছ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।” স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়ছেন। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো সময়মতো বই হাতে পায়নি। কিন্তু বই বিক্রির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।” ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রহুল আমিন তালুকদার বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ খুবই গুরুতর। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”  ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল  বলেন, “সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া বা বই বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এ ঘটনায় অভিভাবকেরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে সরকারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বশীল শিক্ষক-কর্মচারীদের এই ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাকি বই বুঝে পাওয়া এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের সরকারি বই পৌঁছে দেয়া সরকারের অঙ্গীকার।  অথচ দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার বই বিক্রির এ অভিযোগ শুধু শিক্ষাঙ্গনে অনিয়মের চিত্রই নয়। বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

শেরপুরের ঝিনাইগাতী দিঘীরপাড়  ফাযিল মাদরাসায় সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ!

Update Time : ০৬:২২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 মিজানুর রহমান,শেরপুর জেলা  প্রতিনিধি:শেরপুর জেলার  ঝিনাইগাতী উপজেলার দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রেরিত সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ। জানা গেছে যে , প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক (শিক্ষক প্রতিনিধি) নওশেদ আলী এবং অফিস সহকারি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে। ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া, রাহিদুল ইসলাম, মোবাস্সার, আবু বকর সিদ্দিক, মুন্নি, রিয়াজুল ইসলামসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের মাঝে বিনামূল্যের সরকারি বই সম্পূর্ণভাবে বিতরণ করা হয়নি। বাইরে কেজি দরে বই বিক্রি করেছে। এখনো আমাদের ২-৩টি বই হাতে আসেনি। উপরন্তু বই প্রদানের সময় আমাদের কাছ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।” স্থানীয় সচেতন মহল বলেন, বিনামূল্যের সরকারি বই বিক্রি করা একটি গুরুতর অনিয়ম এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকারের প্রতি চরম অবহেলা। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়ছেন। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওবায়দুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী হয়তো সময়মতো বই হাতে পায়নি। কিন্তু বই বিক্রির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।” ঝিনাইগাতী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রহুল আমিন তালুকদার বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ খুবই গুরুতর। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”  ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল  বলেন, “সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া বা বই বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এ ঘটনায় অভিভাবকেরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে সরকারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বশীল শিক্ষক-কর্মচারীদের এই ধরনের অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাকি বই বুঝে পাওয়া এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের সরকারি বই পৌঁছে দেয়া সরকারের অঙ্গীকার।  অথচ দিঘীরপাড় ফাযিল মাদরাসার বই বিক্রির এ অভিযোগ শুধু শিক্ষাঙ্গনে অনিয়মের চিত্রই নয়। বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।